কম্পিউটার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর-2024

কম্পিউটার সম্পর্কে

কম্পিউটার আজকের দিনের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। এই ডিজিটাল প্রযুক্তির দিনে আসে যদি আপনি কম্পিউটার সম্পর্কে না জানে তাইলে আপনি শিক্ষিত হয়েও মূর্খের দলে আবদ্ধ। কারণ কম্পিউটার ব্যবহার হয়না এমন কোন কোম্পানি নাই বাংলাদেশ তথা পুরো পৃথিবীতে। আপনি এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যদি চলতে চান অবশ্যই কম্পিউটার সম্পর্কে জানতে হবে। তবে শুধু কম্পিউটার সম্পর্কে জানলেই হবে না। আপনাকে কম্পিউটারের বর্তমান ব্যবহার ও জানতে হবে। 

 

কম্পিউটার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কাকে বলে?

উত্তর কম্পিউটারের সকল যন্ত্র বা যন্ত্রাংশকে এক কথায় হার্ডওয়্যার বলে। বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে, কম্পিউটারের বাহ্যিক অবকাঠামো গঠনের জন্য বা তৈরির জন্য একটি কম্পিউটারে যে সকল পার্টস বা যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। সকল যন্ত্র বা যন্ত্রাংশকেই হার্ডওয়্যার বলা হয়। 

সফটওয়্যার কাকে বলে?

সফটওয়্যার হলো নির্দিষ্ট কোন সমস্যার সমাধান বা কোন ডাটার সমষ্টি। যার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। অন্য দিকে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার হলো কম্পিউটারের হাড়গুড় আর মাংস পেশী অন্য দিকে সফটওয়্যার হলো হৃৎপিণ্ড। 

সফটওয়্যার কত প্রকার?

কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার হলো একটা নিষ্ক্রিয় প্রাণহীন যন্ত্র মাত্র। এই সকল যন্ত্রকে সচল করতে কিছু প্রোগ্রামের প্রয়োজন হয়। এই প্রাণহীন যন্ত্রাংশকে পরিচালনা করতে বা সংক্রিয় করতে যে সকল প্রোগ্রাম বা কোড ব্যবহার করা হয় তাঁকে সফটওয়্যার বলে।

সফটওয়্যার প্রধানত ২ প্রকার। 

  1. সিস্টেম সফটওয়্যার, যেমন: বিভিন্ন ধরনের OS Windows, Linux, Ubontu ইত্যাদি হলো সিস্টেম সফটওয়্যার।
  2. অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার, যেমন: Microsoft office

বি:দ্র: কম্পিউটারের সকল হার্ডওয়্যার বা যন্ত্রাংশকে বলা হয় হাড়গোড় আর মাংস পেশী। অন্য দিকে কম্পিউটারের সফটওয়্যার কে বলা হয় প্রাণ শক্তি। 

কম্পিউটার ইউনিট/ অংশ

আমরা যে কম্পিউটার ব্যবহার করি তা তিনটি ইউনিটে কাজ করে। ১। ইনপুট ইউনিট, ২। প্রসেসিং ইউনিট, ৩। আউটপুর ইউনিট। 

কম্পিউটার ইনপুট কি?

সাধারণ ভাবে যদি চিন্তা করি ইন অর্থ আসে প্রবেশ করানো বা ঢোকানো। আর কম্পিউটারের ভাষায় ইনপুট হলো তথ্য প্রদান করা। এখন তথ্য আমরা সাধারণত প্রদান করি আমাদের কি করা প্রয়োজন তার উপরে ভিত্তি করে। তার মনে অর্থ দাঁড়াল কোনো সমস্যার সমাধানের জন্য (কম্পিউটার কিসের ভিত্তিতে কাজ করবে তার তথ্য দেয়া) আমরা কম্পিউটার কে যে তথ্য প্রদান করি তাই হলো কম্পিউটারের ভাষায় ইনপুট।

 

আপনি যদি কম্পিউটার সম্পর্কে অ্যাডভান্স কিছু জানতে চান, তাইলে আপনাকে কম্পিউটার সম্পর্কে একটু গভীর ভাবে কম্পিউটার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে হবে। 

প্রসেসিং ইউনিট কাকে বলে 

আপনি কোন সমস্যার সমাধান খুঁজতে যখন কম্পিউটারে ইনপুট প্রদান করে তখন কম্পিউটার আপনার ইনপুট গ্রহণ করে। এখন কথা হলো কম্পিউটার কি আপনার ইনপুট নিয়ে সে বসে বসে ঘুমাবে? কখনোই না। কম্পিউটার আপনার ইনপুট পাওয়ার সাথে সাথে ওই সমস্যার সমাধান খুঁজতে থাকে, কাজ করতে থাকে। এখানে কম্পিউটার যে আপনার সমস্যা নিয়ে কাজ করছে বা সমাধানের উপাই খুজতেছে এই প্রক্রিয়াকেই বলা হয় প্রসেসিং। আর কম্পিউটারে যে ইউনিটে এই কাজ করে তাকেই বলা হয় কম্পিউটারের প্রসেসিং ইউনিট। 

 

কম্পিউটার আউটপুট কি

আপনি কিন্তু ইতিমধ্যে কম্পিউটার কে বলেছেন আপনার একটি সমস্যার কথা (যেটাকে কম্পিউটারের ভাষায় আমরা বলি ইনপুট)। কম্পিউটার কিন্তু আপনার প্রদানকৃত সমস্যা নিয়ে কাজও শুরু করেছে (তার মনে কম্পিউটার ইনপুট অনুযায়ী প্রসেসিং শুরু করেছে)। এখন সে সমস্যার প্রসেসিং করে কি করবে? অবশ্যই কোনও একটা কিছু জানাবে। তাই না? জি জানাবে। কম্পিউটার এই যে কাজ শেষ করে কিছু জানাচ্ছে (ফলাফল জানাচ্ছে) কম্পিউটারের ভাষায় এই ফলাফলকে বলা হয় আউটপুট। আর কম্পিউটারের তিনটি ইউনিটের মধ্যে আউটপুট শেষ ইউনিট।

 

সিপিইউ কাকে বলে 

আপনি কিন্তু ইতিমধ্যে কম্পিউটার সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনে গেছেন। আবার চলুন কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি বিষয় জেনে আশি। CPU নামটি হয়তো সবার পরিচিত বিশেষ করে যারা কম্পিউটার স্টুডেন্ট। 

CPU এর পূর্ণ রূপ হলো Central Processing Unit; আমরা কম্পিউটারে ইনপুট প্রদান করে আউটপুট পাই। এখন কথা হলো ইনপুট প্রদান করে এমনি এমনি কিন্তু আউটপুট আসেনি। কম্পিউটার আপনার কাছে থেকে তথ্য গ্রহণ করেছে। এবং এই তথ্য সে বিচার বিবেচনা করেছে। তার পর একটি পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রদান করেছে। এখন এই যে বিচার বিশ্লেষণ কাজ টা করল তা কিন্তু সিপিইউ করে দিয়েছে। এই সিপিইউ অংশে কম্পিউটারের গাণিতিক যুক্তিক কাজ সহ সকল প্রক্রিয়াকরণ কাজ সম্পূর্ণ হয়। 

RAM কি

RAM এর পূর্ণরূপ হলো Random Access Memory; RAM একটি অস্থায়ী মেমোরি। কম্পিউটার ব্যবহারকারি কোন চাইলে Random Access Memory বা RAM হতে যেকোনো ডাটা বা তথ্য মুছে বা ডিলিট করতে পারবে। এবং চাইলে খুব সহজে পরিবর্তন ও করতে পারে। 

 

 ROM কি 

Read Only Memory এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ROM; ROM হলো একটি স্থায়ী মেমোরি। কম্পিউটার ইউজার বা ব্যবহারকারি রোমের ডাটা মুছে ফেলতে পারে না। রোমের ডাটা কম্পিউটার প্রস্তুতকৃত কোম্পানি স্থায়ী ভাবে ডেভলপ বা সংরক্ষণ করে দেয়। স্থায়ী মেমোরির ডাটা গুলো শুধু কিছু সময়ের জন্য কম্পিউটারের মনিটরে প্রদর্শিত হয়।

RAM এবং ROM এর পার্থক্য

RAM এর বৈশিষ্ট্য নিচে দেয়া হলো:

  • RAM এর পূর্ণরূপ হলো Random Access Memory;
  • এটি একটি অস্থায়ী মেমোরি।
  • কম্পিউটার ব্যবহারকারী এই মেমোরির ডাটা মুছে ফেলতে পারে।
  • এই মেমোরির ডাটা ব্যবহারকারী চাইলে পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংযোজন খুব সহজেই করা যায়।
  • আপনি চাইলেই আপনার কম্পিউটারের অস্থায়ী মেমোরি বাড়াতে পারবেন।
  • RAM মাদারবোর্ডের সাথে সংস্থাপিত থাকে।

 

ROM এর বৈশিষ্ট্য নিচে দেখানো হলো:

  • ROM এর পূর্ণরূপ হলো Read Only Memory;
  • ROM একটি স্থায়ী মেমোরি।
  • কম্পিউটার ব্যবহারকারী এই মেমোরির ডাটা মুছে ফেলতে বা ডিলিট করতে পারে না।
  • এই মেমোরির ডাটা ব্যবহারকারী চাইলে পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংযোজন করতে সক্ষম নয় কারণ রোমের ডাটা কম্পিউটার তৈরিকৃত কোম্পানি কর্তিক ডেভলপ করা।
  • আপনি চাইলেই খুব সহজে আপনার কম্পিউটারের ROM বাড়াতে পারবেন না।
  • ROM মাদারবোর্ডের সাথে সংস্থাপিত কম্পিউটার তৈরিকৃত কোম্পানি কর্তিক।

 

কম্পিউটারের মাদারবোর্ড কাকে বলে

কম্পিউটারের মাদারবোর্ড হলো একটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার পার্টস। কম্পিউটার এর মাদারবোর্ড ছাড়া কখন কম্পিউটার চিন্তা করা যায়না। মাদারবোর্ড হলো একটি সার্কিট বোর্ড যার উপরে কম্পিউটারের অন্য সকল হার্ডওয়্যার সংস্থাপন করা হয়। আপনি কম্পিউটারের যেকোনো পার্টস সংযুক্ত করেননা কেন। আপনাকে মাদারবোর্ড এর উপরে বা সাথেই সংযুক্ত করতে হবে। আপনার PC এর প্রসেসর, রাম, রোম, কুলিং ফ্যান, গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি সব এই মাদারবোর্ড এর সাথেই সংস্থাপন করা হয়। আপনি যখন আপনার পিসিতে পাওয়ার দিচ্ছেন তখনই এই মাদারবোর্ড এ থাকা সকল হার্ডওয়্যার স্ব স্ব সফটওয়্যার এর মাধ্যমে সক্রিয় হয়। যার ফলে আমরা দেখতে পাই একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার।

 

PC এবং Laptop এর পার্থক্য 

পিসির বৈশিষ্ঠ্য 

  • PC হলো Personal Computer এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
  • পিসি আকারে বড় হয়।
  • এটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত কষ্ট সাধ্য।
  • এর হার্ডওয়্যার খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায়।
  • সার্ভিসিং সহজ ওবং সার্ভিসিং খরচ তুলনা মূলক কম।
  • খুব সহজে পরিচালনা করতে হলে পিসিতে আলাদা ডিভাইস মাউস, কীবোর্ড, স্পিকার এবং মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে হয়।
  • কম খরচে একটি পূর্ণাঙ্গ পিসি পাওয়া যায়।

 

ল্যাপটপের  বৈশিষ্ঠ্য 

  • ল্যাপটপ হলো ছোট আকারে ভাঁজ যোগ্য ডিভাইস।
  • এটি আকারে ছোট হয়।
  • এটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব সহজেই স্থানান্তরিত করা যায় বলে খুব জনপ্রিয়।
  • ল্যাপটপের যন্ত্র বা পার্টস খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায় না ওবং মডেল অনুযায়ী স্থাপন করতে হয়। সার্ভিসিং তুলনা মূলক কঠিন ওবং সার্ভিসিং খরচ তুলনা মূলক বেশি।
  • ল্যাপটপ পরিচালনার জন্য আলাদা ডিভাইস মাউস, কীবোর্ড, স্পিকার এবং মাইক্রোফোন প্রয়োজন হয় না, কারণ কোম্পানি কর্তিক স্থাপন করা থাকে।
  • ল্যাপটপ সহজে বহন করা যায় এবং দেখতে সুন্দর তাই এর দাম টা ও বেশি হয়ে থাকে।
 

কম্পিউটারের জনক কে 

চার্লস ব্যাবেজ ১৮২১ সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিন নামে একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। কিন্তু ডিফারেন্স ইঞ্জিন এর যন্ত্রের পার্টস গুলো সূক্ষ্ম পার্টস ছিলো বলে স্থাপন করা এবং পার্টস তৈরি করতে হিমশিম খেতে হয়। যার ফলে ডিফারেন্স ইঞ্জিনের প্রজেক্টটা একটা সময় স্থগিত হয়।এবং পরে গণনা কার্যকে আরও তরান্বিত করতে চার্লজ ব্যাবেজ একটি যন্ত্র নকশা আবিষ্কার করেন ১৮২২ সালে। চার্লস ব্যাবেজের এখনকার আবিষ্কৃত যন্ত্রের নাম দেন এনালিটিক্যাল ইঞ্জিন। এনালিটিক্যাল ইঞ্জিনের নকশা সবার নজরে আনেন ১৮৩৩ সালে। এই এনালিটিক্যাল ইঞ্জিনের নকশার উপর ভিত্তি করেই কম্পিউটারের পরবর্তী চিন্তা ধারণা উদ্ভব হয়। তাই চার্লস ব্যাবেজকে কম্পিউটারের জনক বলা হয়। 

 

প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার কে

এনালিটিক্যাল ইঞ্জিনের প্রোগ্রাম তৈরি করেন লেডি অ্যাডা। বিশ্বে তিনিই প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার। যদিও অ্যাডা যে যন্ত্রের জন্য প্রোগ্রাম করেছিলেন তা সাফল্যের মুখ দেখেনি। 

Leave a Reply