কোরবানির মাংস সংরক্ষণ সহজ পদ্ধতি ঈদুল আযহা 2024

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ

সামনে মুসলানের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব “ঈদুল আজহা” সবার মাথায় একটাই চিন্তা তা হলো কিভাবে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করে কিভাবে দীর্ঘ দিন খাওয়া যায়। 

আপনি যদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রিকস ফলো করেন তাইলে সম্ভব কোরবানির মাংস সংরক্ষণ অনেক দিন রাখা।

রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ 

আপনাকে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করণ পদ্ধতি ফলো করতে হলে অবশ্যই রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ থাকে প্রয়োজন। কেন না রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ ব্যবহার করে অনেক দিন কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করা যায়। যদি ভালো মানের কোন রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ থাকে তাইলে খাবারের স্বাদ বা টেস্ট ও ভালো থাকে। তবে রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ যদি ভালো সার্ভিস বা সেবা দিতে না পারে তাইলে কিন্তু খুব বেশি দিন রাখলে খাবারের স্বাদ যেমন নষ্ট হবে তেমনি খাবারও নষ্ট হতে পরে। তাই রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ মাংস সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হলে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ভালো মনের রিফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ বাছায় এর দিকে।

 

সময় নিয়ে সংরক্ষণ

কোরবানির মাংস কেটে ঘরে এনে সাথে সাথেই কখনোই ফ্রিজে রাখা যাবে না। কারণ, আমরা জানি মানুষের শরীরে সব সময় রক্ত চলাচল করে যার কারণে সবসময় মানুষের শরীর গরম থাকে। ঠিক তেমনি পশুপাখির শরীরে ও একুই ঘটনা ঘটে। যার কারণে মাংস পেশি, শরীরের রক্ত ইতাদি সব সময় গরম থাকে। যদিও রক্ত চলাচল বন্ধ হয় (পশুপাখি জবাই করার পর বা মারা যাবার পর) তার পর ও কিছু সময় লাগে (পশুপাখির আকার আকৃতির উপর নির্ভর করে) শরীর বা মাংস পেশি ঠান্ডা হতে। তাই কোরবানির পশু জবাই বা কাটার সাথে সাথে ফ্রিজে ঢুকাবেন না কারণ মাংস গরম থাকে। তাই সময় নিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুণ। না হলে হিতের বিপরীত হতে পরে।

 

ফ্রিজের তাপমাত্রা খেয়াল করুণ 

আপনি রান্নার সময় খেয়াল করলে দেখতে পারবেন যে, রান্নার পাত্রের যদি বেশি কিছু রান্না বসানো হয় তাইলে ওই পাত্রের বস্তূ বা পানি গরম হতে সময় বেশি লাগে। একুই ভাবে যদি রান্নার পাত্রের কম বা অল্প কিছু বস্তু পানি দেন তাইলে তুলনা মূল্যক অনেক সময় কম লাগে (একুই তাপমাত্রায়)। আবার যদি আগুন বা তাপমাত্রা বাড়ানো হয় তাইলে আবার টাইম বা সময় কম বেশি হয়। এটা তো বললাম আগুনের কথা, ঠিক তেমনি ফ্রিজের তাপমাত্রা যায় দেন না কেন ফ্রিজে রাখা বস্তুর উপরে নির্ভর করবে বরফে জমাট বাঁধতে কত সময় লাগবে। তাই মাংস ফ্রিজে রেখে অবশ্যই প্রথমে তাপমাত্রা রাখবেন হাই (ফুল পাওয়ার/ সর্বোচ্চ যাতে তাড়াতাড়ি মাংস বরফে জমাট বাঁধে) পাওয়ার, তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি থেকে ৪ ডিগ্রি। 

 

সঠিক ভাবে প্যাকেট জাত করণ

যখন আপনি মাংস বা মাছ ফ্রিজে সংরক্ষণ করবেন তখন অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ভাল ভাবে প্যাকেট জাত করা হয়। কারণ ফ্রিজের মাংস সব একত্রে রাখা হয় বলে একটার সাথে অন্য তা লেগে যায় এবং বরফ জমাট বাধার সময় পলি বা প্যাকেট অতপত ভাবে আটকে যায়। যার কারণে পরে যখন খাবারের জন্য প্যাকেট টা বের করতে যাবে তখন নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্যাকেট জাতটা খুব জরুরি।

অনেকে আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে বাসার জন্য একটা ফ্রিজের সাধ হলেও কিনতে পারে না।তাই বলে কী তারা তাইলে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করে খেতে পারবে না? তারাও  কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করতে পারবেন। তাদের জন্য কোরবানির মাংস সংরক্ষণ পদ্ধতি হিসাবে আমি দুইটা সিস্টেম নিয়ে আসছি এক হলো রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ, দুই আগুলে জ্বাল করে বা ফ্রাই করে। 


সামনে ঈদ কথাও ঘুরতে না গেলে হয়? মনমুগ্ধকর স্থান মেঘাই নৌকা ঘাট ঘুরে আসতে পারেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুণ মেঘাই কাজীপুর পোস্টটি


ফ্রিজ ছাড়া কোরবানির মাংস সংরক্ষণ পদ্ধতি 

১। রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ 

কোরবানি শেষ করে আগে খেয়াল করবেন যে আকাশে রোদ আছে কী না। যদি ভালো রোদ থাকে তাইলে মাঝারি টুকরো করে তাড়াতাড়ি শুকাতে দিন। একাধারে ৩ থেকে ৫ দিন ভালো রোদে শুকাতে হবে। কারণ মাংস এর পুরত্ব এবং মাংসে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। আর হা চর্বি যুক্ত মাংস শুকাতে না দেয়া ভালো কারণ চর্বি রোদে গোলে পরে যাবে। তাই রোদে শুকাতে চর্বি ছাড়া মাংস নির্বাচন করুণ। প্রয়োজনে চর্বি চুক্ত মাংস ভেজে বা ফ্রাই করে খেয়া ফেলুন। যদিও চর্বি না খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ পদ্ধতিতে যা খেয়াল করতে হবে।

  • মাংস ভালো ভাবে শুকিয়েছে কিনা। যদি ভালো ভাবে না শুকায় এই মাংস নষ্ট হয়ে যাবে।
  • চর্বি যুক্ত মাংস শুকাতে দিয়েছেন কী না। যদি চর্বি যুক্ত মাংস শুকাতে দিয়ে থাকেন তাইলে খেয়াল করুণ ওই চর্বি শুকিয়েছেন কিনা। শুকানোর অনুপযোগী হলে তা মাংস হতে বিচ্ছিন্ন করুণ এবং পুনঃরায় খেয়াল করুণ।
  • খেয়াল করতে হবে রোদ কম অবস্থায় মাংস শুকনো হচ্ছে কিনা। যদি কম রোদে শুকনো হয় তাইলে মাংস নষ্ট হচ্ছে কী না।
  • শুকানোর সময় ক্ষতিকর কোন পশুপাখি মাংস নষ্ট করছে কিনা ইতাদি।

 

রোদে শুকানো মাংস খাবার পদ্ধতি 

মাংস তো রোদে শুকালে এখন তা অনেক শক্ত, তো খাবো কী ভাবে, তাইতো? চলুন জেনে আশি

  • শুকানো মাংস প্রথমে গরম পানিতে ভালো ভাবে সিদ্ধ করে নিন। অবশ্যই বেশি সময় নিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। না হলে মাংস সিদ্ধ হবে কিন্তু শক্ত থাকতে পরে।
  • এখন সিদ্ধকৃত মাংস হয়তো তাজা মাংসের মতো না কিন্তু খাবার উপযোগী। তাই এখন আপনার পছন্দের খাবার তৈরি করুণ (যেমন টি আপনি চাচ্ছেন)।

 

২। ভাজি করে বা ফ্রাই করে 

আপনি চাইলে কোরবানির মাংস ভাজি করে বা ফ্রাই করে সংরক্ষণ করতে পারবেন। তার জন্য প্রতি দিন সকাল বিকেল দিনে দুই বার ভাজি বা ফ্রাই করতে হবে। ৪ দিন থেকে ৭ দিন ভাজি করে সংরক্ষণ করে ১৫ থেকে ২০ দিন রাখা যায়।

এই পদ্ধতিতে এক্সট্রা কিছুই দরকার হয় না। আপনি রান্নার জন্য যা মশলা দরকার একুই পরিমাণ মশলা দরকার শুধু বেশি পরিমাণে জাল করতে হয়।

 

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ পূর্বক লক্ষণীয় 

  • মাংস যদি ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে চান তাইলে ভালো ভাবে পরিষ্কার করেছেন কী না তা লক্ষ করুণ।
  • সংরক্ষণ করার জন্য যে মাংস রেখেছেন তা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আছে কী না তা দেখে নিন। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় না আসলে কিছু সময় অপেক্ষা করুণ, তারপর ফ্রিজে সংরক্ষণ করুণ।
  • মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণের জন্য ভালো ভাবে প্যাকেট জাত করেছেন কী না তা লক্ষ করুণ। ভালো ভাবে প্যাকেট জাত না হলে কিছু দিনের মধ্যেই একত্রে লেগে যেতে পারে, যা পরবর্তী কালে আপনাকে ভোগান্তিতে ফেলবে।
  • ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করার সময় ভালো করে খেয়াল করুণ ফ্রিজের তাপমাত্রা ওই সময়ের জন্য সর্বোচ্চ করেছেন কিনা। বেশি মাংস রাখছেন বলে ফ্রিজিং হতে সময় লাগে। 
  • যদি কোরবানির মাংস রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে চান তাইলে খেয়াল করুণ, শুকাতে দেয়া মাংস ঠিক ভাবে রোদ পাচ্ছে কিনা। এবং যত বেশি খেয়াল করে তাড়াতাড়ি শুকানোর চেষ্টা করুণ। কারণ মাংসের পুরত্ব বেশি এবং মোটা তাই শুকাতে সময় লাগে বেশি। তবে সঠিক মাত্রায় তাপমাত্রা না পেলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এই পদ্ধতিতে ভালো ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ খুব জরুরি।
  • রোদে শুকাতে যত দূর সম্ভব মাংস পাতলা করে কাটুন এতে তাড়াতাড়ি শুকাবে। এবং খেয়াল করুণ যেন পশু পাখি নষ্ট না করে।
  • ভাজি পদ্ধতিতে সঠিক পরিমাণে লবণ মসলা দিয়েছেন কী না (তবে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঝাল এবং লবণ দিন কারণ যত ভাজি করবেন ততই মাংসের পুরত্ব কমবে)।
 

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ পূর্বক পরিষ্কার কেন জরুরি

আপনি মাংস যে পদ্ধতিতেই সংরক্ষণ করেন না কেন, অবশ্যই ভালো ভাবে পরিষ্কার করে সংরক্ষণ করবেন। বিশেষ করে যখন আপনি মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করবেন। কারণ মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বরফে জমাট বাঁধে, আপনি যখন অপরিষ্কার মাংস রাখবেন (অনেকে মনে করে যে এখন পরিষ্কার কর কী হবে যখন রান্না করবো তখন পরিষ্কার করে রান্নাই বসাব এই ভেবে পরিষ্কার না করেই রেখে দেয়) তখনি বরফের সাথে জমাট বেধে তা মাংসের সাথে মিশে যায়। 

আপনার জানে যে জীবাণু আগুনে মরে যায়, কিন্তু জীবাণু বরফে জমাট বেধে বছরে পর বছর বেঁচে থাকে। তাই ভালো ভাবে পরিষ্কার করে তার পর সংরক্ষণ করুণ।


সরকারি জব, NTRCA শিক্ষক নিবন্ধন, প্রাইমারি শিক্ষক এবং ব্যাংক জব সহ সকল চাকরির প্রস্তুতির জন্য ভিজিট করুণ হোম পেজ 

Leave a Reply