অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর দপ্তর বণ্টন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধামে বাংলাদেশ সরকারের সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। এবং ইতিমধ্যে আপনারা জানেন যে বাংলাদেশের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পূর্ণ নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে। সেই ফলপ্রসূতিতে গতকাল রাত প্রায় ৮.৩০ মিনিটে নোবেল লরিয়েট ড. মোহাম্মদ ইউনুস সহ বাকি সদস্যগণও শপধ নেন অন্তর্বর্তীকালীন-সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে। চলুন দেখে আসি কে কোন দপ্তরের দায়িত্ব পেল।
গতকাল রাতে অন্তর্বর্তীকালীন-সরকারের উপদেষ্টা প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই দপ্তর বণ্টন করেন। এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয় আজ শুক্রবার ৯ই আগস্ট ২০২৪ইং। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস
যে সব দায়িত্ব পালন করবেন উপদেষ্টা হিসাবে তাহলো ২৭টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্ব।
২৭টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এগুলো হল:-
- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
- প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
- সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ
- শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়
- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়
- কৃষি মন্ত্রণালয়
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
- সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়
- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
- মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়
- পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়
- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়
- খাদ্য মন্ত্রণালয়
- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
- ভূমি মন্ত্রণালয়
- রেলপথ মন্ত্রণালয়
- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়
- নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়
- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়
- মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
অন্য সব উপদেষ্টাদের যেসব দায়িত্ব থাকবেন তাহলো।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
ড.সালেহউদ্দিন আহমেদ
পরিচিতি: সালেহউদ্দিন আহমেদ হলেন একজন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, বেসামরিক কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়) সেই সাথে বর্তমান বাংলাদেশ এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
অন্তর্বর্তীকালীন-সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
ড.সালেহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তীকালীন-সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
আসিফ নজরুল
পরিচিতি: তিনি একজন বাংলাদেশী রাজনীতির সাহসী সমালোচক, লেখক, ঔপন্যাসিক, জাতীয় পত্রিকা নিয়মিত কলামিস্ট, রাজনৈতিক ভাষ্যকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিল্প বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
আদিলুর রহমান খান
পরিচিতি: আদিলুর রহমান খান একজন মানবাধিকার কর্মী এবং তার প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্থার নাম হলো “অধিকার” যা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল। একুই সাথে তিনি আইনজীবী আর সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অব বাংলদেশ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
এ এফ হাসান আরিফ
পরিচিতি: . এ এফ হাসান আরিফ হলেন একজন আইনজীবী, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (ফখরুদ্দিন আহমেদ) উপদেষ্টা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
এম সাখাওয়াত হোসেন
পরিচিতি: এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বাংলাদেশী লেখক ও বক্তা এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনার সাবেক নির্বাচন কমিশনার নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হিসাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় টেলিভিশন কলামিস্ট। সেই সাথে ফ্রিল্যান্স ভাষ্যকার হিসাবে কাজ করেন। এম সাখাওয়াত হোসেন 32 টিরও বেশি বই লিখেছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
তৌহিদ হোসেন
পরিচিতি: তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার (দক্ষিণ আফ্রিকায়)।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান:
পরিচিতি: সৈয়দা রিজওয়ানা একজন আইনজীবী এবং পরিবেশবিদ। এবং পরিবেশবিদ হিসেবে, ২০০৯ সালে গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল পুরস্কারে ভূষিত হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
শারমিন মুরশিদ
পরিচিতি: শারমিন মুরশিদ হলেন একজন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং ব্রতী নামক সংস্থার নির্বাহী কর্মকর্তা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
আ ফ ম খালিদ হোসেন
পরিচিতি: ডক্টর এ এফ এম খালিদ হোসেন একাধারে একজন ইসলামী পন্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সম্পাদক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বক্তা এবং সমাজ সংস্কারক। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর লেকচারার এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী কর্মকর্তা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
ফরিদা আখতার
পরিচিতি: ফরিদা আক্তার হীরা হলেন রাজনীতিবিদ, লেখক, গবেষক এবং একজন আন্দোলন কর্মী সেই সাথে বাংলাদেশের সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
নুরজাহান বেগম
পরিচিতি: নূরজাহান বেগম হলেন নোবেল লরিয়েট ড. মোহাম্মদ ইউনুস প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
নাহিদ ইসলাম
পরিচিতি: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য যাকে নির্বাচন করা হয়েছেন সে হলো নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সম্মনয়ক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হলেন
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
পরিচিতি: যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জন্য যাকে নির্বাচন করা হয়েছেন সে হলো নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সম্মনয়ক।
রাতে বঙ্গভবনে ১৭ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয় কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ জন শপথ নেন বাকি ৩জন ঢাকার বাইরে তাই গতকাল শপথ নেননি।
শপথ না নেয়ারা হলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা, চিকিৎসক বিধান রঞ্জন রায় ও নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক-ই-আজম।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের আশা হলেন আগামী বাংলাদেশ হবে নতুন প্রজন্মের এক স্বাধীন বাংলাদেশ।
Pingback: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন এম সাখাওয়াত হোসেন (M Sakhawat Hossain) - BCS Preparation